বাংলাদেশে জাপানি গাড়ি কেনার কথা ভাবছেন? তাহলে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। জাপানি গাড়ি বিশ্বজুড়ে তাদের টেকসই পারফরম্যান্স, জ্বালানি সাশ্রয়ী ইঞ্জিন ও দীর্ঘস্থায়ীত্বের জন্য জনপ্রিয়। বাংলাদেশের গাড়ি বাজারেও বিশেষ করে রিকন্ডিশনড জাপানি গাড়ির চাহিদা অনেক বেশি।
প্রথমবার গাড়ি কিনছেন, নাকি পুরাতন গাড়ি বদলে নতুন কিছু খুঁজছেন—এই গাইডটি আপনাকে পুরো প্রক্রিয়াটি বুঝতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশে Toyota, Honda, Nissan, Mazda, Mitsubishi-এর মতো জাপানি ব্র্যান্ডগুলোর জনপ্রিয়তার প্রধান কারণগুলো হলো:
জ্বালানি সাশ্রয়ী: শহরের জ্যামে উপযোগী।
দীর্ঘস্থায়ী ও নির্ভরযোগ্য: কঠিন আবহাওয়ায়ও ভালো পারফর্ম করে।
স্পেয়ার পার্টস সহজলভ্য: প্রায় সব শহরেই মেলে।
উন্নত ফিচার: পুরাতন মডেলেও হাইব্রিড, অটো ট্রান্সমিশন, সেফটি ফিচার থাকে।
বাংলাদেশে আপনি দুটি ধরনের জাপানি গাড়ি পেতে পারেন:
একদম নতুন গাড়ি (Brand New)
রিকন্ডিশনড গাড়ি (জাপানে ব্যবহৃত, এরপর ঠিকঠাক করে আমদানি করা)
রিকন্ডিশনড গাড়ি বেশি জনপ্রিয় কারণ এগুলোর দাম কম এবং কন্ডিশনও বেশ ভালো থাকে। জাপানে গাড়ির নিয়মিত ইন্সপেকশন হয়, তাই গাড়িগুলো সাধারণত কম মাইলেজ ও ভালো অবস্থায় থাকে।
গাড়ির দাম ছাড়াও বিবেচনায় রাখুন:
বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন ফি
ইন্স্যুরেন্স
ট্যাক্স ও আমদানি শুল্ক
ভবিষ্যতের মেইনটেনেন্স
দ্রষ্টব্য: সাধারণত একটি রিকন্ডিশনড Toyota Axio বা Honda Grace-এর দাম পড়ে ১৫–৩৫ লক্ষ টাকার মধ্যে।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় কিছু জাপানি গাড়ির মডেল:
Toyota: Aqua, Axio, Allion, Premio
Honda: Grace, Fit, Vezel
Nissan: X-Trail, Sylphy
Mazda: Axela, Demio
আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফিচার নির্বাচন করুন—জ্বালানি খরচ, হাইব্রিড কিনা, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স, ট্রাঙ্ক স্পেস, রিসেল ভ্যালু ইত্যাদি।
রিকন্ডিশনড গাড়ি কিনলে অবশ্যই জাপানি অকশন শিট যাচাই করুন। এতে থাকবে:
গাড়ির আসল অবস্থা
মাইলেজ
কোনো দুর্ঘটনা বা ক্ষতি হয়েছে কিনা
সেরা মানের গাড়ির জন্য ৪.৫ বা তার ওপরে গ্রেড খুঁজুন।
যেকোনো গাড়ি কেনার আগে ডিলারের ব্যাপারে নিশ্চিত হোন:
বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন আছে কি না
ফেসবুক বা অনলাইন রিভিউ চেক করুন
কত বছর ধরে ব্যবসায় আছেন
ঢাকার উত্তরা, তেজগাঁও, বারিধারা এলাকায় অনেক ভালো ডিলার আছেন।
চেক করুন:
আমদানি কাগজপত্র
কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
আসল অকশন শিট
রেজিস্ট্রেশন কপি (যদি আগে রেজিস্টার করা হয়)
সন্দেহ থাকলে আইনজীবী বা বিআরটিএ অফিসে যাচাই করিয়ে নিন।
গাড়ি রেজিস্ট্রার করতে যা লাগবে:
সব আমদানি কাগজপত্র
রেজিস্ট্রেশন ফি ও রোড ট্যাক্স
নম্বর প্লেট (সাদা রঙ – ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য)
ইন্স্যুরেন্স নিন (Green Delta, Pioneer বা Reliance ভালো অপশন)। রিকন্ডিশনড গাড়ির মেইনটেনেন্সের জন্য ভালো গ্যারেজ হলো Japan Auto, Car House BD বা Autotech BD।
ভুয়া অকশন শিট: অনেক ডিলার এটি জাল করে। অনলাইন টুল বা এক্সপার্ট দিয়ে যাচাই করুন।
অতিরিক্ত দাম: দাম আগে অনলাইনে মিলিয়ে নিন (যেমন: Bikroy, Carmudi, ফেসবুক গ্রুপ)।
ফ্রেম ড্যামেজ যুক্ত গাড়ি: এমন গাড়ি এড়িয়ে চলুন।
বাংলাদেশে জাপানি গাড়ি কেনা একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত—শুধু সঠিক তথ্য ও যাচাই-বাছাই করে কিনুন। সঠিক ডিলারের কাছ থেকে গাড়ি কিনলে আপনি অনেক বছর নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।
যদি আপনি গাড়ি নির্বাচন, অকশন শিট যাচাই বা যেকোনো সাহায্য চান—আমাদের মত অভিজ্ঞ গাড়ি ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। শুভযাত্রা!